November 25, 2023
সাতক্ষীরা পৌরসভায় বিএনপি সমর্থিত মেয়র বহিষ্কার করে উপনির্বাচনের নির্দেশ
সাতক্ষীরা সংবাদদাতা: দুর্নীতি,নাশকতা ও সরকারবিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সাতক্ষীরা পৌর বিএনপির সদস্যসচিব, সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদের পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর –১ শাখার উপসচিব আব্দুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়রের পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয় । গতকাল একই সঙ্গে মন্ত্রণালয় থেকে আরও একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে নতুন মেয়রের কার্যভার গ্রহণ করা পর্যন্তপৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ কাজী ফিরোজ হাসানকে প্রশাসনিক, আর্থিক ক্ষমতাসহ মেয়রের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া একই দিন চিঠি দিয়ে সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়রের শূন্য পদে ৯০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন করার জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবকে অনুরোধ করা হয়েছে। ময়র পদ শূন্য ঘোষণার প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী নাশকতামূলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকা, পৌরসভার ঠিকাদারি কাজে অংশগ্রহণ, পরিষদ সদস্যদের অবমূল্যায়ন ও পরিষদের সভার সিদ্ধান্তবাস্তবায়ন না করা, পৌরসভার পানি শাখা পরিকল্পিতভাবে অকার্যকর করা এবং পৌরসভার স্বার্থিবরোধী বিভিন্ন কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পৌরসভার কাউন্সিলর কর্তৃক অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহীত হওয়ায় স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইনে সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়রের পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। ওই প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, তাজকিন আহমেদ পৌর মেয়র পদের সব সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেন। অথচ তিনি নাশকতামূলক কর্মকান্ডে জড়িত। রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। সাতক্ষীরা পৌরসভার ঠিকাদারি কাজে সরাসরি অংশগ্রহণ, পৌরসভার সদস্যদের অবমূল্যায়নসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগসহ ১০টি অভিযোগ উল্লেখ করে পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদের বিরুদ্ধে ১২ জন কাউন্সিলর ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে লিখিত অনাস্থা প্রস্তাব পাঠান। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে জেলা প্রশাসক বিষয়টি তদন্তকরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ২০২৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বিষ্ণুপদ পালকে নির্দেশ দেন। তদন্তকরে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তিনি ২৫ সেপ্টেম্বর পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদকে ‘অনাস্থা প্রস্তাব’-এর পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা কেন গ্রহণ করা হবে না মর্মে এ চিঠি পাওয়ার ১০ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তাজকিন আহমেদ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বিষ্ণুপদ পাল চিঠির জবাব না দেওয়ায় তিনি কাউন্সিলর ফিরোজ হাসানকে (ভারপ্রাপ্ত মেয়র) অনাস্থা প্রস্তাব–সম্পর্কিত সভা ডাকার আহ্বান জানান। ১৮ অক্টোবর বেলা তিনটার দিকে সাতক্ষীরা পৌরসভা পরিষদের কক্ষে ভারপ্রাপ্ত মেয়র কাজী ফিরোজ হাসানের সভাপতিত্বে সভায় ১২ কাউন্সিলরের মধ্যে ১১ জন উপস্থিত ছিলেন। সভায় উপস্থিত ১১ জনই অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। তবে ওই সভায় পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন না। এ বিষয়ে সাতক্ষীরা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দীন সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়রের পদ শূন্যের চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, প্যানেল মেয়র কাজী ফিরোজ হাসানকে আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা দিয়ে মেয়র হিসেব দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে।
|
|
সম্পাদক র্কতৃক প্রকাশিত |
e-mail: alorparosh@gmail.com- -- |